স্থানীয় মুসলিম নেতাদের অভিযোগ, এনআরসিকে ব্যবহার করে রোহিঙ্গাদের মতো তাদেরও রাষ্ট্রহীন করা হবে। ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য আসামের সরকার বিতর্কিত ‘ন্যাশনাল রেজিস্টার অফ সিটিজেনস (এনআরসি)’ এর প্রথম খসড়া তালিকাটি আজ সোমবার প্রকাশ করা হয়েছে। এতে দেখা যাচ্ছে, মোট ৩.২৯ কোটির মধ্যে ১.৯ কোটি মানুষকে বৈধতা দেয়া হয়েছে, অর্থাৎ তাদেরকে ভারতের বৈধ নাগরিক হিসেবে গণ্য করা হবে। বাকিদের নথিপত্র পরীক্ষা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ। টাইমস অব ইন্ডিয়া এ খবর জানিয়েছে। এনআরসির তালিকায় যাদের ঠাই হয়নি সেই দুই কোটি মুসলমানের এখন রাষ্ট্রহীন হয়ে পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। তালিকা প্রকাশের আগেই এ নিয়ে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা তৈরি হয়েছিল। : এনআরসির স্টেট কোঅর্ডিনেটর প্রতিক হাজেলা জানান, যাদের নাম এই তালিকায় আসেনি তাদের দুঃশ্চিন্তার কোনো কারণ নেই। তাদের নথিপত্র পরীক্ষা করা হচ্ছে। তিনি আরো জানান, এটি একটি জটিল প্রক্রিয়া। তাই দেখা যেতে পারে একই পরিবারের কয়েকজনের নাম হয়ত প্রথম তালিকায় আসেনি। এতে উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নেই। বাকি নথিগুলো পরীক্ষার মধ্যে আছে। এই তালিকাটির পর কমপক্ষে আরো দুটি খসড়া তালিকা প্রকাশ করা হবে বলে জানিয়েছে আসাম সরকার। : মুসলিম জনসংখ্যার দিক থেকে আসামের অবস্থান ভারতে দ্বিতীয়। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির দল ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) গত বছর আসামে সরকার গঠন করে। অনুপ্রবেশকারীরা স্থানীয় হিন্দুদের কর্মসংস্থান নষ্ট করছে দাবি করে ‘অবৈধ’ মুসলিমদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার শপথ নিয়েছিল তারা। এরই ধারাবাহিকতায় একটি আদমশুমারি চালানো হয়। ১৯৫১ সালের পর এটিই আসামে পরিচালিত প্রথম আদমশুমারি। ওই আদমশুমারির ভিত্তিতে নিজস্ব নাগরিকদের আংশিক তালিকা প্রকাশের উদ্যোগ নেয় আসাম সরকার। : নাগরিক নিবন্ধনের দায়িত্বে থাকা আসামের অর্থমন্ত্রী হিমান্ত বিশ্ব শর্মা সম্প্রতি বলেন, আসামে বসবাসরত ‘অবৈধ বাংলাদেশিদের’ চিহ্নিত করতেই এনআরসি করা হয়েছে। এতে যাদের নাম থাকবে না, তাদের ফেরত পাঠানো হবে। তবে যেসব হিন্দু বাংলাদেশে নিপীড়নের শিকার হয়ে আসামে আশ্রয় নিয়েছেন, কেন্দ্রীয় সরকারের নীতি অনুসারে তাদের আসামে আশ্রয় দেয়া হবে বলেও জানান বিশ্ব শর্মা। তার বক্তব্য অনুযায়ী, কেবল বাংলাদেশি মুসলিম অনুপ্রবেশকারীকে বিতাড়িত করার জন্যই নাগরিক তালিকাটি প্রকাশের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। বিজেপি সরকারের এই ধরনের পদক্ষেপ আসামে সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা সৃষ্টি করতে পারে। স্থানীয় মুসলিম নেতাদের অভিযোগ, এনআরসিকে ব্যবহার করে রোহিঙ্গাদের মতো তাদেরও রাষ্ট্রহীন করা হবে। : :
ধর্মঘট প্রতিহতের ডাক দিয়েছে আওয়ামী লীগ
‘দখলদারদের’ উচ্ছেদ, নির্বাচিত নেতাদের কাছে টার্মিনাল হস্তান্তর, পরিবহন সংগঠনে ‘দলীয়করণ বন্ধ’সহ পাঁচ দফা দাবিতে মানিকগঞ্জে আগামী ২ জানুয়ারি পরিবহন ধঘট (হরতাল) র্মডাকা হয়েছে। মানিকগঞ্জ জেলা সড়ক পরিবহন মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদের ব্যানারে জেলা আওয়ামী লীগের একাংশ এই ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে।
এদিকে মানিকগঞ্জ বাস, মিনিবাস, ট্যাম্পো ওনার্স গ্রুপের ব্যানারে ধর্মঘট প্রতিহতের ডাক দিয়েছে আওয়ামী লীগের অন্য একটি অংশ। পাল্টাপাল্টি কর্মসূচির মাধ্যমে পরিবহন খাতের কর্তৃত্ব নিয়ে জেলা আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের দ্বন্দ্ব আরো তীব্রতা পেল।
হরতালের প্রচার করে সারা মানিকগঞ্জে সাঁটা হয়েছে পোস্টার। বিলি করা হচ্ছে প্রচারপত্র (লিফলেট)। পাঁচ দফা দাবি সংবলিত প্রচারপত্রে বলা হয়েছে, গত ১৩ অক্টোবর অবৈধ দখলদাররা মানিকগঞ্জ জেলা বাস টার্মিনালে অবস্থিত মালিক সমিতি, শ্রমিক ইউনিয়ন অফিসসহ বাস টার্মিনাল দখল করে বৈধ পরিবহন মালিক ও শ্রমিক নেতাদের বের করে দিয়েছে। নেতাদের নামে মিথ্যা মামলা দিয়েছে। প্রচারপত্রে দাবি করা হয়েছে, অবৈধ দখলদারদের নেতৃত্ব দিচ্ছেন মানিকগঞ্জ সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ইসরাফিল হোসেন ও পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি জাহিদুল ইসলাম। মানিকগঞ্জ সদর আসনের সংসদ সদস্য ও স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রীর নাম ভাঙিয়ে এবং দলীয় পরিচয়ে তাঁরা এই ‘অবৈধ’ কাজ করছেন। মানিকগঞ্জ-১ আসনের সংসদ সদস্য নাঈমুর রহমান দুর্জয়, মানিকগঞ্জ-২ আসনের সংসদ সদস্য মমতাজ বেগম, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি গোলাম মহিউদ্দিনসহ নেতারা বৈধ পরিবহন মালিক ও শ্রমিক নেতাদের কাছে টার্মিনালের দায়িত্ব এবং অফিস হস্তান্তরের সুপারিশ করেছেন বলেও দাবি করা হয় প্রচারপত্রে।
মানিকগঞ্জ জেলা সড়ক পরিবহন মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদের আহ্বায়ক ও জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কাজী এনায়েত হোসেন টিপু বলেন, এর আগেও ধর্মঘটের কর্মসূচি নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু স্থানীয় প্রশাসন এবং নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খানের আশ্বাসের পরিপ্রেক্ষিতে কর্মসূচি স্থগিত করা হয়। আওয়ামী লীগের স্থানীয় দুজন সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতিসহ বিভিন্ন সহযোগী সংগঠনের নেতারা অবৈধ দখলদারদের হাত থেকে পরিবহন খাত মুক্ত করার সুপারিশ করেছেন। কিন্তু অবৈধ দখলদাররা কোনো কিছুই তোয়াক্কা করছে না। তিনি বলেন, ‘দখলদাররা আওয়ামী লীগ নেতাদের চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছে। তাই আগামী ১ জানুয়ারির মধ্যে অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদ করা না হলে ২ জানুয়ারি সকাল ৬টা থেকে ২৪ ঘণ্টা হরতাল চলবে। ’
এদিকে বাস, মিনিবাস, ট্যাম্পো ওনার্স গ্রুপ ও পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি জাহিদুল ইসলাম বলেন, কাজী টিপু ও জেলা শ্রমিক লীগের সভাপতি বাবুল সরকার এত দিন মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদের নামে টার্মিনাল দখল করে পরিবহন খাত থেকে চাঁদাবাজি চালিয়ে আসছিলেন। পরিবহন মালিক-শ্রমিকরা তাঁদের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে টার্মিনাল থেকে তাঁদের বের করে দিয়েছে। এখন কোনো মালিক-শ্রমিক তাঁদের পক্ষে নেই। ফলে ‘অবৈধ’ হরতাল সফল হবে না বলে দাবি করেন জাহিদুল। তিনি জানান, হরতালের বিরুদ্ধে আজ রবিবার মানববন্ধন কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। তার পরও কাজ না হলে তাঁরা ২ জানুয়ারি রাস্তায় গাড়ি নামাবেন। তিনি বলেন, ‘প্রশাসন ব্যবস্থা না নিলে আমরাই হরতালকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব। ’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা বলেন, পরিবহন খাত নিয়ে দলের মধ্যে যা হচ্ছে, তা লজ্জাজনক ও আত্মঘাতী। দলের নেতাদের নাম ভাঙিয়ে দুই পক্ষই অনড় অবস্থান নিয়েছে। যেকোনো সময় এ নিয়ে সহিংস ঘটনা ঘটতে পারে। তাঁদের মতে, এই দ্বন্দ্বের পেছনে রয়েছে পরিবহনের কর্তৃত্ব দখল ও চাঁদাবাজি। এতে সাধারণ মানুষের কাছে দলের ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে। ফলে আগামী নির্বাচনে এর প্রভাব পড়বে। জেলা আওয়ামী লীগের নেতাদের উচিত যত দ্রুত সম্ভব বিষয়টির একটি সমাধান দেওয়া।
কোটির ক্লাবে ‘টাইগার জিন্দা হ্যায়
বলিউডের টাইগার খ্যাত সালমান খান ও লাস্যময়ী নায়িকা ক্যাটরিনা কাইফ অভিনীত ‘টাইগার জিন্দা হ্যায়' মুক্তির প্রথম সপ্তাহেই ব্যবধানে ৩০০ কোটির ক্লাবে পৌঁছে গেছে। দেড়শ কোটি বাজেটে নির্মিত ছবিটি গত ২২ ডিসেম্বর ৫ হাজার ৭০০ স্ক্রিনে মুক্তি পায়।
এর আগে, মাত্র তিন দিনে ১০০ কোটির ক্লাবে ঢুকে নিজেদের অভিনীত আগের ছবিগুলোর সব রেকর্ড ভেঙে দেন বলিউডের এই হিট জুটি।
ভারতীয় পত্রিকায় প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে জানা যায়, সারাবিশ্ব মিলিয়ে ছবিটির মোট আয় ৩০২ কোটি সাত লাখ রুপি। এর মধ্যে ভারতে ছবিটি আয় করেছে ২৪৪ কোটি ৩৮ লাখ রুপি।
Comments